বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চল্লিশের পরে ডায়েট

ক্রাইম রিপোর্ট ডেস্ক []আপনার শরীর ঠিক কতটা বয়স্ক হবে তা অনেকটাই কিন্তু নির্ভর করে আপনার উপর। কারন,আপনিই পারেন আপনার লাইফস্টাইল ও ডায়েট মডিফিকেশন করে বার্ধক্যকে রুখে দিতে। বয়স চল্লিশ পার করলেই শরীরে অনেক পরিবর্তন চলে আসে। মিষ্টি খাবারের প্রতি থাকা ভালবাসা বেড়ে যায়,কেয়ার ফ্রি ভাব এসে যায় মনে। মানে ফিটনেস কে পাত্তাই দিতে চাইনা, ফলাফল-নানা ডক্টর এর চেম্বারে দৌড়ানো। তখন ভেবে নিই -বয়সের কারনেই এত সিকনেস। বাস্তব হচ্ছে-সুস্থতা ও বার্ধক্য রুখে দেবার একমাত্র উপায়-সঠিক লাইফস্টাইল ও ডায়েট। আর সাথে কিছুটা এক্সারসাইজ অবশ্যই।

এই বয়সে শরীরে বেশি ক্যালরির প্রয়োজন হয় না, তাই ওজন সংক্রান্ত সমস্যা বাড়তে থাকে। সঙ্গে পুরুষদের ক্ষেত্রে বাড়ে-পেশির ক্লান্তি ,ক্রনিক ফ্যাটিগ, পেট ফুলে যাওয়া, অবসাদ ইত্যাদি। মহিলাদের ক্ষেত্রে-হরমোন সংক্রান্ত সমস্যা, বিষন্নতা ইত্যাদি। সঠিক ডায়েট এইসব সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখে। তাই চল্লিশ পেরিয়েও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে ও সতেজ জীবন যাপন করতে আপনার রেগুলার খাবারেই সামান্য কিছু পরিবর্তন জরুরী।

প্রতিদিনের ডায়েটে লো ফ্যাট ও হাইফাইবার ফুড যোগ করুন। যেমন-নানারকম ডাল (মসুর থেকে শুরু করে ছোলার ডাল, বুটের ডাল সবটাই অন্ত্রর্ভুক্ত), টাটকা দেশী ফল/ফলের স্যালাড, সঠিকভাবে রাঁধা শাকসবজি এবং কাঁচা খাওয়ার উপযোগী সবজির স্যালাড (রেসিপির ভ্যারিয়েশন জরুরী ), পরিমিত পরিমানে নানা রকম বাদাম, খেজু্‌র,কিশমিশ ইত্যাদি। এগুলো ভরপুর সাপ্লাই দেবে -ফাইবার,এন্টি অক্সিডেন্ট,ভিটামিনস ও মিনারেলস এর। আর এরাই আপনার বার্ধক্য রুখতে শরীরকে ফুল সাপোর্ট দিয়ে যাবে।

ক্যালশিয়াম এর প্রতি মনযোগী হোন। এতে হাড়ের সমস্যা কমবে। লো ফ্যাট ডেয়ারি প্রোডাক্ট, ডাল, তিল, সয়াবিন প্রতিদিনের খাবারে অবশ্যই রাখুন।

চল্লিশোর্ধদের ওজন হুট করেই বেড়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারন- মিষ্টির প্রতি আকর্ষন কমাতে না পারা। মানে ‘কি আছে জীবনে’ এই টাইপ মনোভাব করে মিষ্টি গ্রহন। তাই দোকানের মিষ্টি খান তবে পরিমান কম। এছাড়া ক্রেভিং টা মেটান খেজুর,কিশমিশ, টাটকা ফল, দই দিয়ে। এসব থেকে পাবেন জিংক যা ইন্সুলিনটা ঠিক রাখবে রক্তের, ফলে মিষ্টির প্রতি আকর্ষনটা কমে।

সপ্তাহে একবার এর বেশি ডায়েটে মাংস রাখবেন না দয়া করে। তবে ফ্যাটি এসিড এর জন্য সপ্তাহে ২-৩ দিন মাছ রাখুন। মাছের ডিফারেন্ট রেসিপিগুলো ট্রাই করুন মাঝে মধ্যে  যেমন-গ্রিলড, বেকড অথবা স্টিমড। সময় ও ঝামেলা খুবই সামান্য তবে স্বাদের বদল তা অসামান্য লাগবে নিশ্চিত।

প্রোটিনের ভালো সাপ্লাই এরজন্য বিভিন্ন খাবারের সাথে মিলিয়ে রোজ -১ টা আস্ত ডিম (আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তি হলে সাদা অংশটি শুধুমাত্র) , এক কাপ পাতলা ডাল/ ছোলা, টক দই, ১ পিস চিকেন বা এক টুকরো পনির খান। ইমিউনিটি বাড়বে ,হুটহাট ক্ষিদে কমবে, সুইট ক্রেভিংও কমবে।

ফ্যাট ডায়েটে রাখুন তবে পরিমান অবশ্যই ভুলবেন না।

স্ট্রেস কমানো জরুরী। মেডিটেশন, ইয়োগা, স্ট্রেচিং, ওয়াকিং, স্লো মিউজিকে ডান্সিং ট্রাই করুন। স্ট্রেসের সাথে জয়েন্ট পেইন বা অবসাদও দূর হয়ে যাবে দেখবেন। এসবের সাহায্যের জন্য ইউ টিউব বেষ্ট অপশন।

রিচ ফুড মাসে ১/২ বার চলতেই পারে, তবে খেয়ে ওইদিন আধা ঘন্টা বা এক ঘণ্টা হেটে নিন অবশ্যই।

ডায়েটের সাথে এক্সারসাইজ ইজ আ মাস্ট এট ফরটি। হালকা কিছু এক্সারসাইজ রোজ করার মেন্টালিটি ও টাইম সেট করুন। তা ফলো করবেন রোজ। ঝড়, বৃষ্টি যাইহোক এক্সারসাইজ নুন্যতম ৫ মিনিট হলেও করে নেবেন। ওজন নিয়ন্ত্রন, হরমনাল ব্যালেন্স, বেলি ফ্যাট কমা, ক্লান্তি দূর করা, হার্ট এর দেখভাল ইত্যাদির জন্য রেগুলার এক্সারসাইজের কোন বিকল্প নেই।

এখন আপনিই ভাবুন এই সামান্য কিছু ব্যাপার এমন কি আর কঠিন, যা ফলো করে আপনি আপনার বয়সের আউট লুকটার চার্ম ধরে রাখতে চাইবেন না। দরকার শুধু একটু আন্তরিক চেস্টা।

Comments are closed.

More News Of This Category